Page Nav

HIDE

Breaking News:

latest

গণতন্ত্র ও শুদ্ধাচার থাকলেই টিকে থাকবে বাস্তুতন্ত্র: তারেক রহমান

  গণতন্ত্র, শুদ্ধাচার ও বাস্তুতন্ত্র: তারেক রহমানের দৃষ্টিভঙ্গি বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্রের প্রশ্ন সবসময়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে স...

 

গণতন্ত্র, শুদ্ধাচার ও বাস্তুতন্ত্র: তারেক রহমানের দৃষ্টিভঙ্গি

গণতন্ত্র, শুদ্ধাচার ও বাস্তুতন্ত্র: তারেক রহমানের দৃষ্টিভঙ্গি


বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্রের প্রশ্ন সবসময়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গণতন্ত্রের সঙ্গে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছেন—বাস্তুতন্ত্রের নিরাপত্তা। প্রাণী ও পরিবেশ রক্ষার প্রশ্নকে তিনি রাষ্ট্র ও রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত করে তুলেছেন, যা রাজনৈতিক বক্তব্যে এক ভিন্ন দৃষ্টান্ত।

সম্প্রতি রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত “প্রাণী ও প্রাণের মিলন মেলা” প্রদর্শনীতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি বলেন—রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে যদি গণতন্ত্র এবং শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠিত থাকে, তবে বাস্তবিকভাবেই বাস্তুতন্ত্র নিরাপদ থাকবে। তার বক্তব্য শুধু রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; তিনি যুক্তি ও উদাহরণের মাধ্যমে প্রাণী ও পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেছেন।


প্রাণী অধিকার ও মানব সভ্যতার টেকসই ভবিষ্যৎ


তারেক রহমান স্পষ্ট করে বলেছেন, প্রাণীর অধিকার রক্ষা কেবল মানবিক দায়বদ্ধতার জায়গা নয়, বরং এটি মানব সভ্যতার উন্নয়ন ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য অপরিহার্য। উদাহরণ হিসেবে তিনি এডিস মশা ও ডেঙ্গুর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, শহরে ব্যাঙের নিরাপদ আবাস হারিয়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে মশা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কমে গেছে। অর্থাৎ, প্রাণীর অস্তিত্ব রক্ষা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার সঙ্গেও জড়িত।


তিনি ব্যাখ্যা করেন, প্রতিটি প্রাণী প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত এবং একে অপরের জন্য উপকারী। মৌমাছি, ফড়িং, প্রজাপতি কিংবা জোনাকি—সবাই প্রকৃতির সৌন্দর্য ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে অবদান রাখে। তাই একটি প্রাণীর বিলুপ্তি মানেই পুরো বাস্তুতন্ত্রের জন্য হুমকি।


গণতন্ত্র ও প্রাণীর অধিকারের সম্পর্ক


তারেক রহমানের বক্তব্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি উঠে এসেছে। তিনি তুলনা করেছেন—মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যেমন গণতন্ত্র অপরিহার্য, ঠিক তেমনিভাবে প্রাণীর অধিকার রক্ষার জন্য বাস্তুতন্ত্রের নিরাপত্তা অপরিহার্য।
এটি একদিকে রাজনৈতিক বক্তব্য, অন্যদিকে পরিবেশ রক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকেও এক নতুন দিশা।


তিনি আরও বলেন, ধর্মীয়ভাবেও প্রাণীর গুরুত্বের স্বীকৃতি রয়েছে। শুধু ইসলাম নয়, অন্যান্য ধর্মেও প্রাণীকে প্রকৃতির সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইতিহাসের বিভিন্ন মনীষীরাও এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বলেছেন।


আইন, নীতি ও বাস্তবতা


বাংলাদেশে প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন, জীববৈচিত্র্য রক্ষা আইনসহ পরিবেশ সংশ্লিষ্ট নানা আইন আছে। কিন্তু সেগুলো কতটা সময়োপযোগী এবং কতটা কার্যকরভাবে প্রয়োগ হচ্ছে, সেটি একটি প্রশ্ন। তারেক রহমান প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে এসব আইন যুগোপযোগীভাবে সংস্কার করবে এবং প্রাণী ও বাস্তুতন্ত্রের নিরাপত্তায় কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।


তিনি তুলে ধরেন, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংঘের (IUCN) রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৬০০ প্রজাতির মধ্যে প্রায় ৩৯০ প্রজাতি বিলুপ্তির মুখে। রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও হাতির মতো প্রাণীর সংখ্যা দ্রুত কমে আসছে। ১৯৮০-এর দশকে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪০০–৫০০-এর কাছাকাছি, যা এখন নেমে এসেছে প্রায় শতাধিকের কাছে। একইভাবে হাতির সংখ্যা কমে গেছে ২০০-এর নিচে।


কেন রাজনৈতিক বক্তৃতায় পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ?


বাংলাদেশের রাজনীতিতে সাধারণত অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, দুর্নীতি, শিক্ষা বা স্বাস্থ্য নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। কিন্তু পরিবেশ ও প্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক বক্তব্য খুব বেশি শোনা যায় না। তারেক রহমানের এই বক্তব্য সেই জায়গায় এক ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে।


তিনি দেখিয়েছেন, গণতন্ত্র শুধু মানুষের ভোটাধিকার বা মত প্রকাশের স্বাধীনতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক ও দায়িত্ববোধকেও প্রভাবিত করে। একটি দুর্নীতিগ্রস্ত বা অব্যবস্থাপূর্ণ রাষ্ট্রে যেখানে মানুষের মৌলিক অধিকারই সুরক্ষিত থাকে না, সেখানে প্রাণী ও পরিবেশ রক্ষার উদ্যোগও ব্যাহত হয়।


উপসংহার


তারেক রহমানের এই বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক অভিনব সংযোজন। তিনি প্রাণী ও পরিবেশকে শুধু কল্যাণমূলক বিষয় হিসেবে নয়, বরং রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক শুদ্ধাচারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করেছেন। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, মানব সমাজের নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে পরিবেশ ও প্রাণীর নিরাপত্তা অগ্রাধিকার দেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।


এমন এক সময়ে যখন বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য হ্রাস ও প্রাণী বিলুপ্তির সংকট মোকাবিলায় সংগ্রাম করছে, তখন বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির মঞ্চ থেকে এই ধরনের বক্তব্য নিঃসন্দেহে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।


তারেক রহমান: সংক্ষিপ্ত জীবনী

পরিচয়


তারেক রহমান বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র। তিনি বর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা


  • জন্ম: ২০ নভেম্বর ১৯৬৭, কুমিল্লা সেনানিবাস।
  • শৈশব কেটেছে রাজনৈতিক ও সেনা পরিবেশে।
  • শিক্ষাজীবনে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পড়াশোনা করেন।

রাজনৈতিক জীবন


  • ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে আসেন।
  • বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
  • ২০০৮ সালের পর থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন, সেখান থেকেই দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
  • বর্তমানে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, কার্যত দলের সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী।

অবদান ও রাজনৈতিক অবস্থান


  • তিনি সংগঠনকে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর করতে চেষ্টা করেছেন।
  • রাজনৈতিক বক্তৃতায় সর্বদা গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার ও রাষ্ট্রের শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্ব দেন।
  • সাম্প্রতিক সময়ে পরিবেশ ও প্রাণী অধিকার বিষয়েও বক্তব্য রেখেছেন, যা তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

ব্যক্তিগত জীবন


তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান একজন চিকিৎসক। তাঁদের একমাত্র কন্যা জাইমা রহমান যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করছেন।






সবার আগে পেতে Follow করুন:

" আঁধার আলো নিউজ গুগল নিউজ"

" আঁধার আলো নিউজ টুইটার "

" আঁধার আলো নিউজ ফেসবুক

"আঁধার আলো নিউজ পিন্টারেস্ট ;

" আঁধার আলো নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে"

" আঁধার আলো নিউজ লিংকডইন "