সহকর্মীদের ঈর্ষা — একটি বাস্তব সমস্যা প্রতিদিন কারো না কারো সঙ্গে আমরা কাজ করি, এবং সেই কর্মপরিবেশ—সহকর্মীদের সঙ্গে মিথস্ক...
সহকর্মীদের ঈর্ষা — একটি বাস্তব সমস্যা
প্রতিদিন কারো না কারো সঙ্গে আমরা কাজ করি, এবং সেই কর্মপরিবেশ—সহকর্মীদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া, অফিসের সংস্কৃতি—মানসিক স্বাস্থ্যে গভীর প্রভাব ফেলে। অনেক ক্ষেত্রে সহকর্মীদের কাছ থেকে ঈর্ষার সম্মুখীন হতে হয়। এটি শুধু সম্পর্ককে ব্যাহত করে না, বরং কাজের মান, মনোবল ও কর্মপ্রেরণাতেও ক্ষতি করতে পারে।
মূল সংবাদে বলা হয়েছে, “সাফল্য বা স্বীকৃতি” যখন একজনের পক্ষেই আসে, তখন অন্য অনেকের মনে হীনমন্যতা ও ঈর্ষার অনুভূতি জাগতে পারে।
কিন্তু তখন আপনি কী করবেন? কাজ ছেড়ে চলে যাওয়া সবসময় সমাধান হতে পারে না। বরং সামলানোর কিছু কার্যকর উপায় ও মনোভাব গড়ে তোলা জরুরি। নিচে একাধিক ধাপ ও পরামর্শ দেওয়া হলো:
ঈর্ষান্বিত সহকর্মীর আচরণ — সাধারণ লক্ষণ ও চিহ্ন
প্রথমেই, বুঝে নেওয়া জরুরি — সহকর্মী ঈর্ষান্বিত হলে তারা সাধারণত এমন কিছু কাজ করতে পারে:
- গুজব ছড়ানো বা ভুল তথ্য দেওয়া
- আপনার কাজকে ছোট করা বা ফলাফলকে অবমূল্যায়ন করা
- হেয়করা মন্তব্য করা বা আচরণে বিদ্বেষপ্রবণতা দেখানো
- আপনার সাফল্য বা প্রশংসাকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা
কী করতে পারেন — ধাপে ধাপে কার্যকর পদক্ষেপ
১. পেশাদারিত্ব বজায় রাখুন
ঈর্ষান্বিত সহকর্মীর সঙ্গে যুক্ত হওয়া মানে আগুনে ঘি দেয়া — পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। সংবাদে বলা হয়েছে, “অফিস পলিটিক্স এড়িয়ে চলুন। বিনয়ের সঙ্গে নেতিবাচক কথোপকথন থেকে নিজেকে মুক্ত করুন।”
তাই:
- ব্যক্তিগত ভাবে উত্তেজিত হওয়া থেকে বিরত থাকুন
- অপ্রয়োজনীয় কথোপকথন এড়িয়ে চলুন
- সমস্যা মুখোমুখি আলোচনায় (যেমন সময় ও পরিস্থিতি মেনে) আনুন
২. নিজের দক্ষতা ও কাজের দিকে মনোযোগ দিন
ঈর্ষার একটি বড় কারণ হলো — অন্যের স্বীকৃতি ও সাফল্য দেখে অনিরাপদ অনুভব করা। সংবাদে বলা হয়েছে, “ঈর্ষান্বিত সহকর্মীরা তাদের নিজস্ব অক্ষমতা সম্পর্কে অনিরাপদ থাকে বলেই অন্যকে ঈর্ষা করে। এটি মোকাবিলা করার সেরা উপায় হলো নিজের কাজের ওপর মনোযোগ দেওয়া।”
তাই আপনার:
- কাজের গুণমান উন্নত করুন
- পরিকল্পিত ও সময়মতো কাজ শেষ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন
- নিয়মিত স্কিল-উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করুন
৩. মধ্যস্থতা ও পরিমিত যোগাযোগ
সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলাই যেতে পারে, তবে সেটি বাহ্যিকভাবে শান্ত থাকেই। কিছু পরামর্শ:
- শুধু বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করুন, ব্যক্তিগত অপবাদ এড়িয়ে চলুন
- কথোপকথনের সময় নেটিভ দৃষ্টিভঙ্গা বজায় রাখুন
- কিছু বিষয় উপেক্ষা করাও বিচারসাপেক্ষ — সব বিষয়ে যুক্ত হওয়া ঠিক নয়
৪. সমর্থন খুঁজুন, দরকারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বা মানবসম্পদ বিভাগ (HR) জড়িয়ে পড়ুন
যদি পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে আপনার কাজ, মানসিক স্বাস্থ্যে ক্ষতি হচ্ছে:
- সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে লিখিত অভিযোগ দিন
- সহকর্মী বা সুপ্রতিষ্ঠিত সহকর্মীদের মধ্যে মিত্রতা গড়ে তুলুন
- প্রয়োজন হলে ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং বা মেন্টরশিপ গ্রহণ করুন
৫. মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা করুন
ধ্যান, শারীরিক ব্যায়াম, উপযুক্ত বিশ্রাম, বন্ধুবান্ধব বা পরিবারে মনের কথা শেয়ার — এগুলি আপনার মানসিক শক্তি ধরে রাখতে সহায়তা করবে।
সারাংশ ও গুরুত্ব
- ঈর্ষান্বিত সহকর্মী**—অফিসে একটি সাধারণ কিন্তু জটিল সমস্যা।
- তাদের আচরণ চিনে রাখা উচিত (গুজব ছড়ানো, হেয় প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি)।
- পেশাদারিত্ব ধরে রাখা**, **নিজের কাজের দিকে মনোযোগ**, **পরিমিত যোগাযোগ**, **সমর্থন খোঁজা**, **মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা**—এই পাঁচটি মূল উপায়।
- কাজ ছেড়ে পালানো সবসময় উত্তম বিকল্প নয়; বরং পরিস্থিতি ম্যানেজ করার দক্ষতা গড়ে তোলা অধিক গুরুদায়বহ।
সবার আগে পেতে Follow করুন:
" আঁধার আলো নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে"